অভিনয়ের পাশাপাশি বহুদিন ধরেই তাঁর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘দেবশ্রী রায় ফাউন্ডেশন’র মাধ্যমে পথকুকুরদের নানা উদ্যোগ নিয়ে এসেছেন। এবার দক্ষিণ কলকাতার এক আবাসনে এক পোষ্য কুকুরের সঙ্গে অ’ন্যা’য় হওয়ার কথা শুনেই রুখতে গিয়ে চরম অপমানিত হলেন বিশিষ্ট অভিনেত্রী ও সমাজকর্মী দেবশ্রী রায়। সারমেয়দের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে এর আগেও বহুবার নানা কটাক্ষ ধেয়ে এসেছে অভিনেত্রীর দিকে। তবে এইবার এমন অপমানিত হতে হবে তাঁকে,তিনি দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ কলকাতার ৩৬০টি ফ্ল্যাটের ওই বিরাট আবাসনে পোষ্য কুকুর ঘোরানো নিয়ে আপত্তি বহু আবাসিকদের। আরও অভিযোগ, এই কারণে ওই আবাসনের বাসিন্দা অদৃজা ও তাঁর স্বামীর উপর নাকি রীতিমতো চড়াও হয়েছিলেন বাকি বহু আবাসিক। তাঁদের গায়ে চকোলেট বোমা ফাটিয়ে দেওয়ারও হু’ম’কি দিয়েছিলেন! ঘটনাচক্রে এই আদৃজা হলেন দেবশ্রী রায়ের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অন্যতম সদস্য। খবর পেয়েই রবিবার বিকেল নাগাদ ওই আবাসনের অন্দরে পৌঁছান দেবশ্রী। কিন্তু তাতে ঝা’মে’লা আরও বেড়ে যায়।অন্যায় আটকাতে গিয়ে, রীতিমতো ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় দেবশ্রীকে।
দেবশ্রীর কথায়, “এত অপমানিত কোনওদিন হয়নি। ভীষণ দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। আমাকে কটাক্ষ করা হয়েছে, ‘আপনি তো অভিনেত্রী এখানে কেন? আর যদি এসে থাকেন, কার আমন্ত্রণে এসেছেন?’ গত ১৮-১৯ বছর ধরে পথকুকুরদের জন্য আমার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রয়েছে। তাদের উপর অত্যাচার হলে বা যদি খবর পাই তারা ক’ষ্ট পাচ্ছে কোথাও, সেখানে আমি হাজির হয়ে যাই। তার জন্য কোনও আমন্ত্রনের প্রয়োজন হয় না আমার। মানুষ যেভাবে আক্রমণাত্মক হয়ে আসছে, যেভাবে আমার দিকে তেড়ে আসছে, এটা খুব অ্যালার্মিং।”
দেবশ্রীর দাবি, সেই আবাসনের বাসিন্দারা তাঁকে বারবার বলেছেন, অদৃজা বলে মেয়েটি নাকি তাঁর কুকুরটিকে মন্দিরের সামনে ঘোরান। যেখানে তাঁরা কালীপুজো করেন। যা নিয়ে দেবশ্রী পাল্টা প্রশ্ন তুললেন, “আমার প্রশ্ন কীসের অন্যায়? ঈশ্বর কি শুধু মানুষের জন্য? ঈশ্বর কি পশুপাখি, প্রকৃতির জন্য নয়? আমি মানি কুকুর তো মহাকালের দূত। আমাদের যত দেবদেবী সবার বাহন পশু। সেখানে মহাকালের দূতকে শিবমন্দিরের সামনে নিলে পা’প হয়? শিবের তো প্রিয় জিনিস কুকুর। ঠাকুর কি শুধু মানুষের জন্য, পশুর জন্য নয়, পাখির জন্য নয়, প্রকৃতির জন্য নয়?”
